রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০০ অপরাহ্ন
এম আই ফারুক আহমেদ : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলার রায় সামনে রেখে দলের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। একটি মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি।বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, রায়ে খালেদা জিয়ার সাজা হলে জোটগতভাবে আন্দোলন করা হবে।এ বিষয়ে ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াতে ইসলামী। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রয়োজন হলে জোটগতভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা ছাড়া দলটি অনেকটা নীরব ভূমিকায় থাকবে বলে জানা গেছে।
জামায়াতের কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাঁদের দলের শীর্ষ নেতাদের ‘অন্যায়ভাবে’ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এর বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখায় জামায়াত-শিবিরের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। সে সময় বিএনপি অনেকটা নীরব ভূমিকা পালন করে। এককভাবে বিক্ষোভ করতে গিয়ে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জামায়াত। বর্তমানে কৌশলী অবস্থান নিয়ে ব্যাপক গোপনীয়তা রক্ষা করে চলছে দলটির কার্যক্রম। সহিংস যেকোনো কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার অঘোষিত নীতি নেওয়া হয়েছে।
এ অবস্থায় মামলার রায় খালেদা জিয়ার বিপক্ষে গেলেও বড় ধরনের কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাবে না জামায়াত। প্রয়োজনে বিবৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে পারে দলটি।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুস সামাদ কালের খবরকে বলেন, ‘বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সাজা হলে জামায়াতের কিছুই করার নেই। আদালত তাঁকে শাস্তি দিলে জামায়াতের কীই বা করার আছে!’ ২০ দলীয় জোটের আন্দোলনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, তার পরও এ বিষয়ে জামায়াতের কেন্দ্রীয় শুরা থেকে কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।
বিভিন্ন কারণে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে কিছুটা টানাপড়েন চলছে। এর বহিঃপ্রকাশ ঘটে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) স্থগিত হওয়া উপনির্বাচনে জোটের সিদ্ধান্তের আগেই জামায়াতের পক্ষ থেকে মেয়র পদে প্রার্থী ঘোষণার মাধ্যমে।
জামায়াতের একটি সূত্রে জানা যায়, ডিএনসিসি নির্বাচনের সময় জামায়াতের মত না নিয়েই প্রার্থী ঘোষণা দেয় বিএনপি। এ নিয়ে জামায়াতে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও জামায়াতকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। এসব কারণেই ডিএনসিসি নির্বাচন ঘিরে আলাদাভাবে প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে নিজের গুরুত্ব প্রকাশ করে জামায়াত। এ ছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলটি যাতে চাহিদামতো আসন পায় সে জন্য বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশলও নিয়েছে দলটি।
সূত্র মতে, জামায়াতের আমির মকবুল আহমাদ ও সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানসহ শীষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা কয়েক মাস ধরে কারাগারে আছেন। নতুন করে কেউ যাতে গ্রেপ্তার-নির্যাতনের শিকার না হন সে বিষয়ে দলের সবাইকে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। দলীয় নেতাদের মুক্তির জন্য আইনি পদক্ষেপ ছাড়া রাজপথের কোনো কর্মসূচিতেও যাচ্ছে না দলটি।